ক্যাসিনো ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মেনন, সভাপতি খালেদ, সম্পাদক সাব্বির!
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে অবৈধ ক্যাসিনোর ব্যবসা। এসব ক্যাসিনো গুলোতে প্রতিদিনই বসতো জুয়ার আড্ডা। বুধবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত র্যাবের অভিযানে ধরা পরে এসব অবৈধ জুয়ার ব্যবসা। আটক করা হয় ক্যাসিনোর অন্যতম গডফাদার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। তবে এসব ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন আরও অনেক রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা।
যুবলীগ নেতা খালেদের নিয়ন্ত্রণেই রাজধানীতে রয়েছে প্রায় ১৭টি ক্লাব। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়ংমেনস নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে ক্যাসিনো।
খালেদের পরিচালিত ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে বুধবারের অভিযানে নারী-পুরুষসহ ১৪২ জনকে আটক করে র্যাব। এসময় ক্লাবটি থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা সহ জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, মদ ও বিয়ার।
এছাড়া অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর অভিযোগে গুলশান থেকে আটক করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকেও।
জানা গেছে, ইয়ংমেনস ক্যাসিনো ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হলেন স্থানীয় এমপি ও ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
২০১৬ সালে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে সভাপতি ও হাজী মো. সাব্বির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের ৩১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি করা হয়। এরপর কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় তৎকালীন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে সর্বসম্মতিক্রমে ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
তবে ক্লাবটিতে জুয়ার আসর বসতো এই সম্পর্কে জানতেন না ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন এমন দাবিই করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ক্লাবের ভেতরে জুয়ার আসর বসার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি এটিকে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার ক্লাব হিসেবেই জানতাম।
তিনি আরও বলেন, মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী সাব্বির এ ক্লাবটিরও সাধারণ সম্পাদক। তিনি একদিন আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে বলে আপনি ক্লাবের চেয়ারম্যান থাকবেন। আমি বলেছিলাম ‘ঠিক আছে’। ব্যাস ওইটুকুই।
মেনন বলেন, ‘আমি জানতাম ওটা ফুটবল ক্লাব, তারা ক্রিকেটও খেলে। তাদের ফুটবল লিগ আছে। আর সেই ব্যাপারেই আমাকে নেওয়া হয়েছিল। আমি সেখানে একবারই গিয়েছি। এরপর সেখানে আমি যাইনি। আর জানিও না সেখানে কী হয়?’
সরকার আগে থেকেই এটার বিষয়ে জানে এবং পুলিশও জানে বলে দাবি জানিয়ে স্থানীয় এমপি ও ওয়ার্কাস পার্টির এই নেতা বলেন, পুলিশ তো এটা ভালো করেই জানে। তারা এতদিনে কিছু করেনি কেন? এটির ভেতরে জুয়া খেলা বা মদের আসরের কোনও দায়দায়িত্ব আমার ওপর বর্তায় না। আমি এটাকে জানি ফুটবল ক্লাব হিসেবে। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি করেছে। এটা একটি ভালো কাজ করেছে।