কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকুরি করছে ৫ সহস্রাধিক রোহিঙ্গা!

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক ।।

কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকুরি করছে ৫ সহস্রাধিক রোহিঙ্গা!

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ২৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন পদে চাকুরি করছেন পাঁচ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা। উখিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনজিওদের মাসিক সমন্বয় সভায় রোহিঙ্গাদের চাকুরি না দেয়ার সর্তক করা হলেও তা মানছে না এনজিওগুলো। তারা সমন্বয় সভায় এক কথা বলে ক্যাম্পে অন্য কাজ করে।এ নিয়ে স্থানীয় ও এনজিওদের মাঝে দিন দিন দূরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি রোহিঙ্গাদের স্থলে স্থানীয়রা চাকুরি করলে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাদের আত্ম-সামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কারণে তা হচ্ছে না। বিভিন্ন কারণে-অকারণে রোহিঙ্গার হাতে স্থানীয়রা লাঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ক্যাম্পভিত্তিক বিভিন্ন এনজিও সংস্থায় কর্মরত স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এনজিও কেয়ার বাংলাদেশে ২শ জন, টিডিএইচে ৫০ জন, এসিএফ-এ ৩শ জন, ওয়ার্ল্ড ভিশনে ৫২ জন, ব্র্যাকে ১৬০ জন, ওয়ার্ল্ড কনসার্ন ৫১ জন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনে ৬০ জন, ডিএসকেতে ৯০ জন, ফ্রেন্ডশিপে ৭০ জন, এমএসএফ-এ ১৫০ জন, রিসডা বাংলাদেশে ৪৫ জনসহ ৩০টি এনজিওতে পাঁচ হাজারেরও অধিক রোহিঙ্গা বিভিন্ন পদে চাকুরিরত আছে। এছাড়া শুধুমাত্র শফিউল্লাহকাটা ১৬ নম্বর ক্যাম্পে কর্মরত আছে ১ হাজার ২০৯ জন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় চাকুরিজীবিরা জানান, একজন রোহিঙ্গার সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকুরি করছে এমন রোহিঙ্গা রয়েছে অর্ধশতাধিক। তারা শুধু ইংরেজীতে লিখতে পারে। ক্যাম্পভিত্তিক হেড মাঝি, ব্লক মাঝির সূত্র ধরে এসব রোহিঙ্গারা চাকুরিতে নিয়োগ থাকলেও তারা আবার ত্রাণসামগ্রী উঠানামা এবং বিতরণের দায়িত্ব পালন করে আলাদাভাবে বেতন সংগ্রহ করে থাকে। যা ক্যাম্প ইনচার্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবগত আছেন। এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে পরবর্তী মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে মর্মে তাকে চাকুরি থেকে বিদায় করে দেয়া হয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, একজন রোহিঙ্গাদেরও চাকুরি দিয়ে এনজিওরা ঠিক কাজ করেনি। যেহেতু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করার পরও তাদের চাকুরিতে নিয়োগ দিয়ে এনজিওরা বাহ্যিক ফায়দা লুটছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, এনজিওদের সমন্বয় সভায় বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদেরকে যাতে কোন চাকুরিতে নিয়োগ দেয়া না হয়।

প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এনজিওদের কাছে জানতে চাইলে তারা এ কথা অস্বীকার করে বলেন, তাদের কাছে কোন রোহিঙ্গা চাকুরিরত নেই। যা আছে তা শুধু স্থানীয় ছেলেমেয়ে। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে দেখার জন্য অচিরেই একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হবে।

সুত্রঃ পূর্বকোণ