ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন নীল জলাধারের কাপ্তাই থেকে

হ্রদটি কৃত্রিম হলেও প্রকৃতি তার সমস্ত রুপে উজাড় করে সাজিয়েছে কাপ্তাই হ্রদকে। যা স্বচক্ষে দেখা ছাড়া কল্পনাও করা যাবে না।

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন নীল জলাধারের কাপ্তাই থেকে
লেকে ভাসছে ভ্রমণ পিয়াসুরা । ছবিঃ মাহমুদ ফারুক
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
 
কাপ্তাই হ্রদ। নাম শুনেছেন অনেকেই কিন্তু দেখা হয়নি এখনো। হয়তো অথবা যাবো যাবো করে যেতে পারেননি অনেকেই। তাহলে এবারের ঈদের ছুটিতে বেরিয়ে পড়ুন রোমাঞ্চকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে কাপ্তাই এর উদ্দেশ্য।
 
পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে প্রকৃতির অপরূপ নৈসর্গিক নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা। আর কাপ্তাই উপজেলা অনন্য পাহাড়, লেকের অথৈ জলরাশি এবং চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহে। ১১,০০০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই কৃত্রিম হ্রদ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আয়তনে সর্ববৃহৎ।
 
এখানে চোখে পড়ে ছোট বড় পাহাড়, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা, ঝর্ণা আর জলের সাথে সবুজের মিতালী। একদিকে যেমন পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্ভার তেমনি লেকের অথৈ জলে রয়েছে বহু প্রজাতির মাছ ও অফুরন্ত জীববৈচিত্র। লেকের চারপাশের পরিবেশ, ছোট ছোট দ্বীপ, নানাবিধ পাখি এবং জল কেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে প্রতি মূহুর্ত। হ্রদটি কৃত্রিম হলেও প্রকৃতি তার সমস্ত রুপে উজাড় করে সাজিয়েছে কাপ্তাই হ্রদকে। যা স্বচক্ষে দেখা ছাড়া কল্পনাও করা যাবে না।
 
কাপ্তাই এর মধ্যে প্রকৃতি প্রেমিরা বোট বা নৌকা ভাড়া করে লেকের জলে ভাসতে ভাসতে চারপাশটা দেখে নিতে পারেন। পাহাড় থেকে লেকের সৌন্দর্য দেখতে কাপ্তাই লেক প্যারাডাইস পিকনিক স্পট থেকে ঘুরে আসতে পারেন। দল বেঁধে নৌ বিহার কিংবা প্যাডেল বোটে চড়ে লেক ভ্রমণ করার সুযোগও রয়েছে এখানে।
 
এছাড়া স্পিডবোট/নৌকা রিজার্ভ নিয়ে কাপ্তাই লেক ঘুরে দেখার পাশাপাশি রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত ব্রিজ, শুভলং ঝর্ণা, রাঙ্গামাটি শহর সহ আরও অনেক স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। কাপ্তাইয়ের কাছেই কর্ণফুলি নদীতে কায়াকিং করার ব্যবস্থা আছে। চাইলে সেই অভিজ্ঞতাও নিতে পারবেন।
 
কাপ্তাইয়ে রাত্রি যাপনের জন্য এখনো তেমন ভালো মানের বাণিজ্যিক হোটেল-মোটেল গড়ে উঠেনি। তাই রাত কাটানোর ইচ্ছা থাকলে আগে থেকেই কাপ্তাইয়ের সরকারি রেস্ট হাউস কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আসা উত্তম।
 
এছাড়াও সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসের অনুমতি সাপেক্ষ্যে সেনাবাহিনী, পিডিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বন বিভাগের রেস্ট হাউসগুলোতে কম খরচে রাত্রি যাপন করা যায়। লেক প্যারাডাইস পিকনিক স্পটেও রাত্রী যাপনের সুযোগ রয়েছে তবে এজন্য বাড়তি অর্থ গুনতে হতে পারে। রাঙ্গামাটি কাপ্তাই এর কাছে হওয়ায় কিংবা আপনার ট্যুর প্ল্যান সেভাবেই হলে রাঙ্গামাটি থাকতে পারেন।
 
যেভাবে যাবেন কাপ্তাই লেক
 
ঢাকার সায়েদাবাদ কিংবা কমলাপুর থেকে বিভিন্ন মানের বাসে করে সরাসরি কাপ্তাই যাওয়া যায় এক্ষেত্রে প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘন্টা সময় লাগে। এছাড়া আপনি চাইলে চট্টগ্রাম থেকেও কাপ্তাই যেতে পারেন। বদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর কাপ্তায়ের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়, ভাড়া ৮০-১২০ টাকা। সময় লাগবে ২ ঘন্টার মত।
 
ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্রগ্রাম এসে বদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে কাপ্তাই যেতে পারবেন। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এসে, সিএনজি যোগেও কাপ্তাই যেতে পারেন।
 
তাহলে আর দেরী না করে বেরিয়ে পড়ুন, উন্মোচন করতে সৌন্দর্য মণ্ডিত বাংলাদেশ কে উপভোগ করতে।
 
নোট: ঘুরতে গিয়ে পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোন জিনিস পেলে আসবেন না।