আবাদ কমলেও ফলন কমেনি আমনের , মীরসরাইয়ের কৃষকের মন ভালো

আবাদ কমলেও ফলন কমেনি  আমনের , মীরসরাইয়ের কৃষকের মন ভালো

পোস্টকার্ড (মীরসরাই) প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে উৎসবমুখর আমন ধান কাটা। ফলনও খুব ভালো। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বেশ ভালো ফলন হয়েছে আমনের। কিন্তু এখন ন্যায্য দাম নিয়েই শুধু শংকা সর্বত্র। কৃষকরা উপযুক্ত মূল্য না পেলে তো কৃষি ব্যয় পুষিয়ে উঠতে পারবে না। তবে সব মিলিয়ে এবার আমনের আবাদ ১০০ হেক্টর কমেছে। আবাদ করলে ভালো ফলনের দরুন তারা কোন প্রভাব পড়বে না কোথাও বললেন কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের থেকে সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্য মতে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন উৎ্‌পাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এখন শুরু হয়েছে ধান ঘরে তোলার কাজ। গত ২৪ নভেম্বর এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আমনের ১০ শতাংশ ধানও ঘরে উঠেছে অনেক কৃষকের। তবে ফলন নিয়ে খুশি হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায় এবার মীরসরাই উপজেলায় ২০ হাজার ৫ শত হেক্টর চাষাবাদ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল ২০ হাজার ৬ শত হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এবার ১০০ হেক্টর কমেছে আবাদ। এবার লক্ষ্যমাত্রা ৮৩ হাজার ৪ শত ৯৯ টন ধান । কৃষি বিভাগ আশা করছেন লক্ষ্যমাত্রা থেকেও বেশী ধান কৃষকরা ঘরে তুলবেন । কারণ ভালো বৃষ্টি ও অনুকূল পরিবেশ বেশ আশাপ্রদ করেছে সবাইকে। আবার ধানের বাজার দর ও কম বলে স্বীকার করেছে কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, এবার প্রতি আড়ি ( ৫ কেজি) ধান ১৮০ টাকা। গত বছর ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, এবার আমনের ফলন খুব ভাল হয়েছে। ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা বৃষ্টিপাতও হওয়ায় ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপদ্রব ছিলো না। এতে করে ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আমরা আশা করছি আমন আবাদের মতো ফলনেও এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে। তবে ন্যায্য দামের বিষয়ে তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে সরকারি পর্যায় থেকে কোন কর্মসূচি আছে কিনা আমরা এখনো জানি না। কৃষকদের জন্য সরকার হয়তো ভর্তুকীতে আমন সংগ্রহ করতে পারে। এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চাষী সবুজ কুমার বলেন, পাল গ্রাম সহ পূর্ব দুর্গাপুরের অনেক এলাকায় আমনের ভালো ফলন হয়েছে এবার। কিন্তু মিঠাছরা বাজারে এখনো ধানের দাম নিন্মমুখি। পুরো মৌসুম আসা পর্যন্ত মূল্য না বাড়লে ঋণগ্রস্ত অনেক কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে না। খৈয়াছরা ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুই কানি জমিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ পড়ে গেছে আবাদে। এখন যদি ঘরের খোরাকী রেখে খরচের টাকার ধানও বেচতে না পারি পরিবার নিয়ে আবার কষ্টে পড়তে হবে। সব মিলিয়ে উপজেলার কৃষকদের ঘরে ঘরে এখন নবান্নের আনন্দের প্রহর অপেক্ষা করছে। সবাই পিঠাপুলির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে দু- এক সপ্তাহের মধ্যে উঠোনে উঠোনে ধান আর শীতের পিঠা পায়েশের ধূমে মত্ত হবে সবাই।