চসিক প্রশাসক সুজনকে এবার টেকনোক্রেট মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী করুন- প্রধানমন্ত্রীকে খোলাচিঠি

চসিক প্রশাসক সুজনকে এবার টেকনোক্রেট মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী করুন- প্রধানমন্ত্রীকে খোলাচিঠি
চসিক প্রশাসক সুজনকে এবার টেকনোক্রেট মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী করুন- প্রধানমন্ত্রীকে খোলাচিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে ৬৬১৮৯ গৃহহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করে (মুজিববর্ষে ঘর পাবে ৯লাখ পরিবার) বিশ্বইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিবাদন ও শুভেচ্ছা।

জাতির এ মহাদুর্যোগময় সময়ে আপনি অত্যন্ত ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করছেন।গত ০২এপ্রিল ২০২০ জনগণকে বাঁচাতে ৩১দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জনজীবন স্বাভাবিক ও দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখাসহ নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনার নির্দেশনায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রাণপণ প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।আপনি মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সসহ বিভিন্নভাবে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।সামাজিক নিরাপত্তায় হাতে নিয়েছেন বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচি।সবকিছু মিলিয়ে আপনি আপ্রাণ প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন করোনার করালগ্রাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে। আপনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এ দেশের জনগণ করোনাযুদ্ধে জয়ী হয়ে আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে-এ দৃঢ়বিশ্বাস আমাদের আছে। গত ২৭জানুয়ারি ২০২১ আপনি মরণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে করোনা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করে মহামারি নিয়ন্ত্রণে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। ২৫জন করোনাযোদ্ধাকে টিকা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ করোনা টিকার যুগে প্রবেশ করলো। 

হে বিশ্বনেত্রী

একজন সংবাদকর্মী হিসেবে চট্টগ্রামের জননন্দিত কর্মীবান্দব ত্যাগী জননেতা আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক করার জন্যে একটি খোলাচিঠি আপনার সদয় দৃষ্টিআকর্ষণের জন্যে আমার ফেসবুকওয়ালে আপলোড করেছিলাম। কাকতালীয়ভাবে কিংবা যেভাবেই হোক আপনি খোরশেদ আলম সুজনকে চসিকের প্রশাসক পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ত্যাগী নেতাকর্মীদের যে আপনি মূল্যায়ন করেন সেটি ছিল একটি সমুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত- যা দেশজুড়ে বঙ্গবন্ধুঅনুসারীদের অনুপ্রাণিত করেছিল। করোনাভাইরাসের(কোভিড-১৯)কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে করতে না পারায় ৬মাসের জন্যে খোরশেদ আলম সুজনকে প্রশাসক করা হয়। কিন্তু ২৭ জানুয়ারি ২০২১ অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনে বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় খোরশেদ আলম আর প্রশাসক পদে থাকছেন না। প্রশাসক সুজনের এ বিদায় নগরবাসী মনেপ্রাণে মেতে নিতে পারছেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নিষ্ঠুর বিধিবিধান সুজনের নজিরবিহীন কর্মতৎপরতা থেমে গেলেও কিছুই করার নেই। ১৮০দিনের জন্যে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার পর খোরশেদ আলম চসিক প্রশাসন কীভাবে পরিচালনা করছেন মিডিয়ার কল্যাণে শুধু চট্টগ্রামবাসী নয়, সারা দেশের মানুষের সাথে আপনিও অবহিত আছেন। দায়িত্বপালনে চসিকের ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন ধর্মপরায়ণ এ অসাম্প্রদায়িক নেতা। দায়িত্ব ও কর্তব্যপালন কাকে বলে কত প্রকার কী কী- তা তিনি উদাহরণ সহকারে বুঝিয়ে দিয়েছেন।আপনার দেয়া দায়িত্ব তিনি হাজারভাগ পালন করেছেন। একজন সাহসী, কর্মঠ, গতিশীল, কর্তব্যপরায়ণ ও নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসক হিসেবে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে অন্য সিটিমেয়র ও জনপ্রতিনিধিদের নজর কাড়েন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনার ঘোষিত জিরোটলারেন্স নীতি অনুসরণ করে চসিকের বিরাজমান অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করেন। নগরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খালনালা পরিস্কার,সড়কউন্নয়ন-সংস্কার,পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, নগরপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ চসিকের সার্বিক উন্নয়নে নেতৃত্বের ক্যারিসমা দেখিয়ে নগরবাসীর অন্তরে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন তিনি। নগরউন্নয়নে তিনি বিরামহীন তৎপরতা চালিয়েছেন,ছুটির দিনও তাঁর কর্মযজ্ঞ নগরবাসীর দৃষ্টিফেরাতে বাধ্য করে ।

শ্রদ্ধেয় হে মানবতার মা

একসময়ের রাজপথের সংগ্রামী ছাত্রনেতা খোরশেদ আলম সুজনকে আপনি ভালো করেই চেনেন।স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ছিল তাঁর প্রবাদতুল্য অবদান।এদেশে যেসব নেতা দেশ, মাটি ও নীতি-আদর্শকে ভালোবেসে রাজনীতির শেখড় থেকে শিখড়ে ওঠেছেন, সুজনভাই তাঁদেরই একজন।আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি ছিলেন নেতাকর্মীদের সারথি ও সাহসী ঠিকানা।রাজনীতির ব্যাকরণ অনুসরণ করলে অনেক আগেই তিনি এমপি-মন্ত্রী হওয়ার কথা।বার বার এমপি পদে দলীয় মনোনয়ন চাইলেও অজ্ঞাতকারণে তাঁকে দেয়া হয়নি। শেষবার মনোনয়ন দিয়ে তা আবার প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। চট্টলবীর জননেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুযোগ্য উত্তরসূরি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, নাগরিক উদ্যোগ এর প্রধান উপদেষ্টা, জনদরদী নেতা খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম মহানগরের একজন পরীক্ষিত নেতা।নগরবাসীর পানিসহ সকল জনদুর্ভোগ নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে জনবান্ধব এ নেতা আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।অর্ধশত বছর গণমানুষের রাজনীতি করেও যদি একজন নেতাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা না হয়, দেয়া না হয় তাঁর কাজের স্বীকৃতি,তাহলে তো কেউ দলের জন্যে নিবেদিতপ্রাণ হবে না। সংসদ নির্বাচনের আরও অনেক দেরি, ততোদিনে সুজনভাইয়ের শারীরিক সক্ষমতা না-ও থাকতে পারে। তাই,  চট্টগ্রাম সিটির ভ্যানগার্ড করোনাযোদ্ধা সর্বজনশ্রদ্ধেয় নেতা গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু,সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা,মনন-মেধা ও অভিজ্ঞতাকে রাষ্ট্রপরিচালনায় কাজে লাগানো যেতে পারে। 

হে জাতির দুর্দিনের কাণ্ডারি

পরিশেষে,আপনার প্রতি আবারও আকুল আবেদন, চট্টলার সেই সিংহপুরুষ চসিক-মেয়র জননেতা, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সতীর্থ, আমজনতার দুর্দিনের পরম হিতৈষী খোরশেদ আলম সুজনের অদম্য কর্মস্পৃহা, দেশপ্রেম ও নেতৃত্বের গুণাবলীকে দেশসেবায় কাজে লাগাতে তাঁকে যদি নৌপরিবহন কিংবা স্থানীয়সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী করেন  তাহলে আমরা চট্টলবাসী আপনার কৃতজ্ঞতাপাশে চিরদিন আবদ্ধ থাকবো।

আপনার শারীরিক সুস্থতা ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।

শ্রদ্ধান্তে-
রোটারিয়ান মোহাম্মদ ইউসুফ
প্রধান-সম্পাদক
সাপ্তাহিক চাটগাঁর বাণী ও চাটগাঁরবাণীডটকম

“শত কবিতায় বঙ্গবন্ধু” কাব্যগ্রন্থের লেখক ।