গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার রায় আজ, বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদালত পাড়ায়

গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার রায় আজ,  বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদালত পাড়ায়

পোস্টকার্ড (আদালত) প্রতিবেদক ।।

আজ বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণার জন্য । ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান দুপুরে এই রায় ঘোষণা করবেন। মামলা দায়েরের তিন বছর চার মাস পর দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া রায় উপলক্ষে ঢাকার আদালতপাড়ায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই আদালতপাড়া এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার আদালতপাড়া পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম ও কৃষ্ণপদ রায়। পরিদর্শন শেষে তারা আদালতপাড়ার বিশেষ নিরাপত্তায় লালবাগ ডিভিশন ও আদালতের ডিসি প্রসিকিউশনকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

ঢাকার আদালতের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি প্রসিকিউশন) জাফর হোসেন বলেন, হলি আর্টিজান মামলার রায় উপলক্ষে ডিএমপির দুই অতিরিক্তি পুলিশ কমিশনার আদালত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা বিশেষ নিরাপত্তার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদিও হামলার কোনো আশঙ্কা নেই, তবে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার খান (জাকির) সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে বলেন, আমরা আশা করি এ মামলার গ্রেফতার আট আসামির মৃত্যুদন্ড হবে। কারণ মামলার সাক্ষ্য ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনে আমরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ রায় ইতিহাসে নজির সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মামলায় আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন। সাক্ষীদের জেরা ও যুক্তি উপস্থাপনে আমরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এরপর বিচারক রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ধার্য করেন।

গত ৩০ অক্টোবর আত্মপক্ষ শুনানিতে আট আসামি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন আদালতের কাছে। এর আগে ২৭ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় অভিযোগভুক্ত ২১১ সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলো জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‍্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। এছাড়া বিভিন্ন অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গিরা তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। পরদিন সকালে সেনাবাহিনী ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামে এক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে পাঁচজন জঙ্গি নিহত হয়। এ ছাড়া অভিযানে জিম্মিদশা থেকে ৩২ জনকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৪ জুলাই রাতে গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন।